আজ || মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করেন বিএনপি বাহরাইন কেন্দ্রীয় কমিটি       ফেনীতে ঈদে আজম এর আনন্দ শোভাযাত্রা ও সমাবেশ       ফেনীর দাগনভূঞায় সমাজসেবা কার্যক্রম বাস্তবায়নে সেমিনার       ফেনীতে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত       ফেনীর দাগনভূঞায় বিএনপি নেতা আবদুল লতিফ জনির অর্থায়নে রাস্তা সংস্কার       ফেনীর দাগনভূঞায় মাছের পোনা অবমুক্তকরণ       ফেনীতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের ৩৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত       ফেনী ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন       বাহরাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারির সাথে বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূতের বৈঠক       বাহরাইনসহ ৫ দেশে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন পেল ইসি    
 


অবশেষে ইউপি চেয়ারম্যানকে তালাক দিলেন সেই কিশোরী নাজমিন আক্তার

অনলাইন ডেস্ক :

অবশেষে সেই ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে তালাক দিলেন কিশোরী নাজমিন আক্তার ওরফে নছিমন (১৪)। চেয়ারম্যানের আয়লা বাজারস্থ বাসায় বসে তিনি তালাকনামায় স্বাক্ষর করেন। এরপর চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার নিজে নছিমনকে তার অভিভাবকদের হাতে তুলে দেন। নছিমন নিজেই যুগান্তরকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শনিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে নছিমন তার তালাকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ সময় নছিমন অনেক অজানা তথ্য দিয়েছেন। কথা বলার সময় অপরপ্রান্তে নছিমনকে খুব উৎফুল্ল মনে হয়েছে।

নছিম জানান, তিনি যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়তেন তখন তার নানা ইউনুস কাজীর বাড়ির সামনে মসজিদে ইমামতি করতেন রমজান। এই রমজানের কাছে তিনি কোরআন শরীফ পড়তেন। কোরআন শরীফ পড়তে গিয়ে এক পর্যায়ে রমজানের সঙ্গে তার প্রেম হয়। তিন বছর ধরে চলে এই প্রেম। এই ঘটনা জানাজানি হয়ে যাওয়ার পরে কয়েক মাস রমজানের সঙ্গে তার যোগাযোগ বন্ধ ছিল। পরে একটি মাধ্যমে রমাজানের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তার সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ হয়। ২৫ জুন সালিশ বৈঠকের জন্য তিনিসহ তার ও রমজানের পরিবারের অভিভাবকরা চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারের বাড়িতে আসেন। তখনো তিনি বুঝতে পারেননি একটি অঘটন ঘটতে যাচ্ছে।

নছিমন আরও জানান,‘ ১৮ মে তার বাবা-মায়ের ইচ্ছে অনুযায়ী তার দাদীর ফুফাতো বোনের ছেলে তাঁতেরকাঠি গ্রামের সোহেল আকনের কাছে বিয়ে দেন। বিয়ের পর নুরাইনপুর বন্দরে বসে তাদের এক ঘণ্টার জন্য দেখা হয়েছিল। কোরবাণীর ঈদে তাকে স্বামীর বাড়ি তুলে দেওয়ার কথা ছিল। তিনি বিয়েতে রাজি ছিলেন না বলেই রমজানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতেন। এরপর দুইজনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ২৪ জুলাই ভবিষ্যৎ স্বপ্ন বুনতে তারা ঘর ছাড়েন। চুনারপুল নামক এলাকা থেকে বাইকযোগে রমজান আর তিনি চলে যান কনকদিয়া ইউনিয়নের কুম্বখারী রমজানের মামা শাহ আলমের বাড়িতে। ওই বাড়িতে তারা দুই দিন ছিলেন। পরে তার বাবা নজরুল ইসলাম বিষয়টি কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে অবহিত করেন। তিনি শুক্রবার সালিশ বৈঠকে বিষয়টি ফয়সা করে দেবেন বলে জানান।

সেই অনুযায়ী উভয় পরিবারের লোকজন সকালে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদের বাড়ি যান। এ সময় চেয়ারম্যান তাকে অন্য একটি রুমে ডেকে নিয়ে বলেন, ‘ ওই ছেলেরতো (রমজানের) টাকা-পয়সা নেই। তুমি তার ঘরে গিয়ে সুখি হতে পারবা না। বরং আমাকে বিয়ে করলে সুখী হবে।’ নছিমন তার কথায় রাজি হননি। তিনি মনে করেছিলেন বুড়ো দাদু (চেয়ারম্যান) তার সঙ্গে দুষ্টমি করছেন। পরে তিনি রুম থেকে বেড় হয়ে সবার উদ্দেশ্যে বলেন, রমজানকে বিয়ে করতে হলে তো আগের স্বামীকে (সোহেল আকন) তালাক দিতে হবে। এরপর কাজী ডেকে এনে তাই করা হলো। এর পর ঘটলো যতো অঘটন। চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার নিজে তাকে বিয়ে করবেন বলে জানান। তার যেই কথা সেই কাজ। তাকে একরকম প্রতারণা করেই বিয়ে করেন। ৫ লাখ টাকা কাবিন করেন। বিয়ের রাতে চেয়ারম্যান তার শোওয়ার রুমে ঢুকতে চাইলে তিনি তাকে ঢুকতে দেননি। ভেতর থেকে দরজা আটকে দেন। এর বাইরে যা যা তার সঙ্গে হয়েছে তা ছিল সব তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে।

শনিবার রাতে শাহিন হাওলাদারের ছেলে তুষার এবং অন্যান্য আত্মীয় স্বজন ও প্রশাসনের চাপে শাহিন হাওলাদার তাকে তার জিম্মিদশা থেকে মুক্তি দিতে রাজি হন। রাতেই ওই কাজীকে ডাকা হয়। এরপর তার কাছ থেকে তালাক নামায় স্বাক্ষর নেওয়া হয়। পরে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার নিজেই তাকে অভিভাবকদের হাতে তুলে দেন। ওই সময় তার নানা ইউনুস কাজী, বাবা ও সাবেক ইউপি মেম্বার নুরুল ইসলাম তাকে বাবার বাড়ির মাঝ পথ পর্যন্ত এগিয়ে দেন। সেখান থেকে তিনি রমজানের সেই মামা শাহআলমের বাড়িতে চলে যান। রমজানের মামাতো ভাই পলাশ তাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যান।

নছিমন বলেন, ‘আমি দারুন খুশি। ধন্যবাদ আপনাকে, ধন্যবাদ যুগান্তরকে। ধন্যবাদ জানাই অন্যান্য সাংবাদিক ভাইদের।’

 


Top